এসএম বিশাল (স্টাফ রিপোর্টার): দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মোবাইল ব্যাংকিং। স্বল্প সময়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে সহজে টাকা লেনদেন করতে পারায় মানুষ এই মাধ্যমের দিকে ঝুঁকছে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।
কিন্তু সহজ এই মোবাইল ব্যাংকিংও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। বেশ কয়েকটি দেশি-বিদেশি প্রতারকচক্র ভয়ঙ্কর প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত প্রতারণার নিত্যনতুন কৌশল উদ্ভাবন করছে। বিকাশের মাধ্যমে এই প্রতারণার ঘটনা ঘটছে সবচেয়ে বেশি।
গতকাল বুধবার নগরীর শিরোইল কলোনি হাজরাপুকুর এলাকার হায়দারের মেয়ে মুক্তা(১৭) এ প্রতারণার শিকার হন। মুক্তা রাজশাহী মহিলা কলেজের ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
এ ঘটনার বিবরণ দিয়ে মুক্তা বলেন, আমার বড় বোন হিরা ঢাকা থেকে আমার বিকাশে দুই হাজার টাকা প্রেরণ করে,তার কিচ্ছুক্ষণ পর মুক্তার মোবাইলে ০১৮৫৯২০৯৫৭৭ নাম্বার থেকে ফোন আসে এবং বলে আমি দোকানদার, আপু কিছুক্ষণ আগে আপনার বোন আমার দোকান থেকে আপনার বিকাশে দুই হাজার টাকা দিয়েছে। আমি আরো একটি নাম্বারে অতিরিক্ত টাকা পাঠিয়ে ফেলিছি । আমি আপনার নম্বার ওই নম্বার মনে করে বিকাশ অফিসে অভিযোগ করেছি। তারা আপনার নাম্বার ব্লক করে দিয়েছে। কিছুক্ষণ পর আপনার নাম্বারে ফোন দিবে আপনি আপনার সমস্যা সমাধান করে নিবেন।
পরে একটি নাম্বার থেকে ফোন আসে এবং বলে আপনার নাম্বারের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করা হয়েছে এবং সাথে সাথে তা ব্লোক করা হয়।
এখন আপনার বিকাশের ব্লক খোলার জন্য আপনার নিজ নম্বারে ১৩ হাজার টাকা বিকাশ করতে হবে। কলেজ পড়ুয়া মুক্তা বলে আমি এত টাকা কোথায় থেকে পাবো ? সে পাল্টা বলে আপু আপনি আপনার নাম্বারে নিবেন, সে টাকা আবার তার বিকাশ এজেন্ট-এ ফিরিয়ে দিবেন।
পরে লাইনটি কেটে দেখি আমার বিকাশ একাউন্টে ১৩ হাজার আর বোনের পাঠানো ২ হাজার টাকা কিছুই নেই।
তার পর সে আবার ফোন দিয়ে বলে আপু আপনার সব টাকা আমার একাউন্টে চলে এসেছে। এ টাকা ফেরত পেতে হলে আমার ০১৮৮৭১৮৬২০৯ নাম্বারে ১৫ হাজার টাকা পাঠাতে হবে। সে ফোনে কথা বলছে এবং দোকান মালিক সাইফুলের ভাগিনা নাম্বার লিখছে।
একই কথা বলে আবার ০১৯৮৪৪৮৭০৪৭ নাম্বার দিয়ে ১৫ হাজার টাকা চাই,আমি পুরা নার্ভাস হয়ে যায়। আমি কিছু বলতেই সে বলে এটাই শেষ, আর লাগবে না, আমি আবার সব টাকা ফিরিয়ে দিবো। তার কিচ্ছুক্ষণ পর দেখি তার ফোন বন্ধ।
এ বিষয়ে কলোনি হাজরাপুকুর এলাকার বিকাশ ব্যবসায়ী সাইফুল বলেন, গতকাল বুধবার আমার ভাগিনা দোকানে বসেছিল রাত্রী ৮ টার দিকে প্রতিবেশী হায়দারের মেয়ে মুক্তা আসে এবং ফোন তার কানে কথা বলা অবস্থায় টাকা পরিশোধ না করে একের পর এক নাম্বারে মোট ৪২ হাজার পাঁচ শত টাকা পার করে নেয়। আমি সল্পপুজির ব্যবসায়ী কি করে কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা ।
স্বাধীন কথা ডট কম ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮